বাংলাদেশ পর্যটকদের ভ্রমণ তালিকার শীর্ষে থাকা একটি দেশের নাম হচ্ছে মালয়েশিয়া। কারণ মালয়েশিয়াতে খুব সহজেই ভ্রমণ করা যায় এবং খুব কম খরচে অনেক জায়গায় ঘুরে আসা যায়। এছাড়া বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়ার ভিসা খুব সহজেই পাওয়া যায়। আমাদের আজকের পোস্টে আলোচনা করা হবে কিভাবে আপনি নিজেই মালয়েশিয়ার টুরিস্ট ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন। –Malaysia Tourist Visa
আমরা সকলেই জানি যে একটি দেশে ভিসা পেতে হলে অবশ্যই কিছু ডকুমেন্টস সাবমিট করতে হবে। একইভাবে মালয়েশিয়াতে টুরিস্ট ভিসা পেতে হলে আপনাকে বিশেষ কিছু ডকুমেন্টস অবশ্যই সাবমিট করতে হবে। ডকুমেন্টস গুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে একটি ভ্যালিড পাসপোর্ট। ৬ মাস এর বেশি মেয়াদ রয়েছে এরকম একটি পাসপোর্ট এবং কমপক্ষে তিনটি পেজ খালি রয়েছে এরকম একটি পাসপোর্ট থাকতে হবে।
এর সাথে একটি আবেদন ফরম জেটি পূরণ করে জমা দিতে হবে। ভিসা এপ্রুভ করার জন্য আবেদন ফরম টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই যথেষ্ট গুরুত্ব সহকারে আবেদন ফরম টি হাতে লিখে অথবা টাইপ করে পূরণ করুন। এরপর আপনার ব্যাংক স্টেটমেন্ট প্রদান করতে হবে। গত ছয় মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট দেখাতে হবে যেখানে আপনার ব্যাংক ব্যালেন্স কমপক্ষে ৬০ হাজার টাকা থাকতে হবে। ব্যাঙ্ক ব্যালেন্স এর ট্রানজেকশন বেশি থাকলে ভালো হয়। আপনি যদি পরিবার এর অন্য কাউকে নিয়ে যেতে চান তাহলে প্রত্যেকের জন্য ৬০হাজার করে মোট ব্যালেন্স আপনার একাউন্টে জমা থাকতে হবে। এরকম একটি ব্যাংক স্টেটমেন্ট সাবমিট করুন।
এরপর একটি এয়ার টিকেট বুকিং রিসিভ প্রদান করুন। টিকেট কনফার্মেশন ডকুমেন্টস লাগবে না। শুধুমাত্র বুকিং দিয়েছেন এরকম একটি ডকুমেন্টস থাকলেই চলবে। এবার আপনার ইউটিলিটি বিল অর্থাৎ পানি গ্যাস বা বিদ্যুৎ বিল এর কপি সরবরাহ করুন। আপনার এন আইডি অথবা বার্থ সার্টিফিকেট এর ফটোকপি প্রদান করুন। এবার আপনার প্রফেশনাল প্রুফ অর্থাৎ স্টুডেন্ট হলে আইডি কার্ড বিজনেসম্যান হলে বিজনেস কার্ড বা ট্রেড লাইসেন্স এবং অন্যান্য পেশার স্বপক্ষে প্রমাণস্বরূপ ডকুমেন্টস সরবরাহ করুন।
তারপর আপনার দুই কপি পাসপোর্ট সাইজ ছবি এবং ট্রাভেল এর বিস্তারিত উপস্থাপন করুন। আপনি সেখানে গিয়ে কোথায় থাকবেন তার হোটেল বুকিং এবং প্রত্যেক দিন এর সম্ভাব্য গন্তব্য স্থল এর বিস্তারিত উল্লেখ করুন।
এ সমস্ত ডকুমেন্ট সংগ্রহ করা হলে আপনার নিকটস্থ মালয়েশিয়ান এম্বাসি কর্তিক নির্ধারিত এজেন্সি যোগাযোগ করুন। এখানে উল্লেখ্য যে বাহিরের কোন এজেন্সিতে গেলে তারা সার্ভিস চার্জ পরিমাণে বেশি নিয়ে থাকে। তবে মালয়েশিয়ান এম্বাসি কর্তৃক নির্ধারিত এজেন্সি তে গেলে আপনার টুরিস্ট ভিসার জন্য খরচ পড়বে আনুমানিক সাড়ে পাঁচ হাজার বা এর কিছু বেশি। মালয়েশিয়ান এম্বাসি কর্তিক নির্ধারিত এজেন্সি লিস্ট পেতে গুগল সার্চ করুন।
উপরিউক্ত ডকুমেন্টস গুলো সুন্দর করে গুছিয়ে এজেন্সিতে জমা দিন। কোন ডকুমেন্টস সংক্রান্ত তথ্য পেতে হলে এজেন্সি তে গিয়ে যোগাযোগ করুন। এক্ষেত্রে এজেন্সি আপনাকে সাহায্য করবে। সব তথ্য ঠিক থাকলে এক মাসের মধ্যেই আপনি টুরিস্ট ভিসা পেয়ে যাবেন।
ভিসা পাওয়ার পর ভালো একটি এয়ারলাইন্সের টিকেট কেটে আপনি ভ্রমণ করতে পারেন। ভিসা পেতে হলে আপনাকে বেশ কিছু ডলার সংরক্ষণ করতে হবে। এম্বেসি কর্তিক যেন বুঝতে পারে যে আপনার কাছে ভ্রমণ করার জন্য যথেষ্ট ডলার বা টাকা রয়েছে। এখানে উল্লেখ্য বিষয়ে যে আপনি যদি মালয়েশিয়ায় গিয়ে পালানোর চেষ্টা করেন কাজ করার জন্য তাহলে মালয়েশিয়ান এয়ারপোর্ট থেকেই তারা বুঝতে পারলে আপনাকে সেখান থেকেই ফেরত পাঠিয়ে দিবে। তাই কোনভাবেই অসাধু উপায়ে অবলম্বন করা উচিত নয়।
আরো দেখুনঃ
ইন্ডিয়ান টুরিস্ট ভিসা প্রসেসিং এবং যাবতীয় বিস্তারিত খরচ সহ
সেন্টমার্টিন দ্বীপ সম্পর্কে নতুন তথ্য- ডুবে যাচ্ছে ধীরে ধীরে